কাঁচ ও অ্যালুমিনিয়াম
ভূত্বক গঠনকারী উপাদান গুলোর মধ্যে অন্যতম উপাদানগুলি হচ্ছে অক্সিজেন (৪৬.৬%), সিলিকোন (২৭.৭%), অ্যালুমিনিয়াম (৮.১%), লোহা (৫%), ক্যালসিয়াম (৩.৬%), পটাসিয়াম (২.৮%), সোডিয়াম (২.৬%), ম্যাগনেসিয়াম (২.১%) ইত্যাদি। এই উপাদানগুলি খনিজ আকারে ভূত্বকে বিদ্যমান। ধাতব সিলিকোন অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হয়ে একটি গ্রুপ তৈরী করে এর নাম সিলিকেট গ্রুপ এবং এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত খনিজ বা মিনারেল সমূহকে বলা হয় সিলিকেট মিনারেল। ভূত্বকের শতকরা প্রায় ৯০ ভাগেরও বেশি অংশই সিলিকেট মিনারেল বা সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত। সর্বাধিক প্রাচুর্যতা সম্পন্ন সিলিকেট মিনারেল হচ্ছে ফেল্ডস্পার মিনারেল (পটাসিয়াম/সোডিয়াম,ক্যালসিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সিলিকেট) তন্মধ্যে প্লাজিওক্লেস ফেল্ডস্পার (সোডিয়াম,ক্যালসিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সিলিকেট) ৩৯% এবং অ্যালকালি ফেল্ডস্পার (পটাসিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সিলিকেট) ১২%। অন্যান্য সিলিকেট মিনারেল গুলোর মধ্যে স্ফটিক বা কোয়ার্টজ ১২%, পাইরোক্সিন ১১%, এমফিবল ৫% এবং ক্লে মিনারেল ৫%। এছাড়া সিলিকেট গ্রুপের অন্যান্য খনিজ সমূহ ভূত্বকের মাত্র ৩ ভাগ এবং ভূত্বকের মাত্র ৮ ভাগ ননসিলিকেট মিনারেল অর্থাৎ কার্বনেট, অক্সাইড, সালফাইড ইত্যাদি।
প্রকৃতির খেয়ালে কিছু প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যেমন বাতাস, পানির স্রোত, তাপ, চাপ ইত্যাদির কারণে ভূত্বকের কিছু অংশ ক্ষয়ে যায় এবং স্থানচ্যুত হয় এবং অজনা উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ভূত্বকের একক হচ্ছে শীলা। প্রত্যেক শীলায় থাকে খনিজ। প্রত্যেক খনিজের থাকে স্বাধীন হওয়ার প্রচন্ড সহজাত প্রবৃত্তি। সেই কারণে ভূত্বকের প্রত্যেক একক প্রত্যেক এককের সাথে সংঘর্ষ করে এবং প্রতিনিয়ত করতেই থাকে। ফলে এদের আকার ছোট হতে হতে ব্যাস দুই (২) মিলিমিটারের চেয়ে কম হলে বালিকণা বা স্যান্ড গ্রেইনে পরিনত হয়। সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে এরা অবক্ষেপ বা স্যান্ড ডিপোজিট হিসেবে জমা হয়। এই অবক্ষেপের বেশির ভাগই কোয়ার্টজ বা স্ফটিক কণা। সিলিকা সম্মৃদ্ধ বালি থেকে বর্তমানে তৈরী হচ্ছে উৎকৃষ্ট কাচ। কাচের সাথে জড়িয়ে আছে ধর্ম, ইতিহাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। মনুষ্য সভ্যতায় কাচের অবদান অনেক এবং যুগে যুগে তা বেড়েই চলেছে।