টাইলসের বিবরণঃ
টাইলস নির্মাণের এক বিশেষ ধরণের সামগ্রী। চুল্লীতে পোড়ান কম পুরুতের কাঁদার তৈরি স্ল্যাবকে টাইলস বা টালি বলে। নির্মাণ কাজে ব্যবহারের সুবিধার্থে বিভিন্ন আকার ও মাপের টালি তৈরি করা হয়। যেমনঃ ঘরের ছাউনি, মেঝে বাঁধাই, ড্রেন নির্মাণ, শোভা বর্ধন ইত্যাদি নানাবিধ প্রয়োজনে টালি ব্যবহত হয়।
টালি মোটা মুটি পাঁচ প্রকারঃ
কাঁদার টালিঃ এই জাতীয় টালি সাধারণতঃ ঘরের ছাউনীর কাজে বেশি ব্যবহার করা হয়। ছাউনির কাজে ব্যবহত টালির মধ্যে সচারচর যে সব টালি ব্যবহত হয়, সেগুলো হলো-
- প্লেইন টালিঃ কাঁদা দিয়ে হাতে প্রস্তুত করা হয়। আটকানোর জন্য দুটি ছোট প্রজেকশন রাখা হয়।
- প্যান টালিঃ এই টালির মাপ- ৪১.২ x ২৩ x ১.৯ সেমি। আটকানোর জন্য কিনারা গুলোতে খাঁজ কাটা থাকে।
- পট টালিঃ ফাঁপা গোলাকার, অর্ধ গোলাকার, ট্যাপারিং ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। এর দৈর্ঘ্য ২৫-৩০ সেমি, এক প্রান্তের ব্যাস ১৫ সেমি এবং অপর প্রান্তের ব্যাস ১২.৫ সেমি ও পুরুত ৯ মিমি।
- ফ্লাট টালিঃ এই টালির মাপ ১৫ x ১৫x ১.২ সেমি হতে ২০ ২০ ১.২ সেমি হয়ে থাকে।
- রিজ টালিঃ ভি-আকৃতির এই টালির দৈর্ঘ্য ৪৫ থেকে ৫০ সেমি হয়ে থাকে।
কংক্রিট টালিঃ এই জাতীয় টালি ১ঃ৩ (সিমেন্টঃবালি) অনুপাতের সিমেন্ট মর্টারের সাথে কাঙ্ক্ষিত রঙ এবং এর উপাদান মিশিয়ে প্রয়োজনীয় আকার আকৃতিতে তৈরি করা হয়। যে কোন মেঝে বা পায়ে চলার পথ নির্মাণে এই টালি ব্যবহার করা হয়।
মেঝে টালিঃ এই জাতীয় টালি সাধারণতঃ বর্গাকৃতি হয়ে থাকে। এর আকার ১৫ সেমি থেকে ৩০ সেমি এর মধ্যে হয়ে থাকে এবং পুরুত ১২ মিমি থেকে ৫০ মিমি পর্যন্ত হয়। এই টালি মোজাইকের বা প্লাস্টিকের বা মার্বেলের হতে পারে। সিমেন্ট ও ছোট ছোট মার্বেল পাথর দাবা ১ঃ২ অনুপাতে ব্যবহার করে মোজাইক টালি তৈরি করা হয়।
দেয়াল টালিঃ এই জাতীয় টালির আকার সাধারণতঃ ১৫ x ১৫ x ১.২ সেমি হয়ে থাকে। ইহা মোজাইক, প্লাস্টিক বা মার্বেলের হয়ে থাকে।
ড্রেন টালিঃ পানি নিষ্কাশনের নালা নির্মাণের জন্য অর্ধবৃত্তাকার অথবা ভি বা ইউ অক্ষরের আকারে ৬০ সেমি হয়ে ১২০ সেমি দৈর্ঘ্যে প্রস্তুত করা হয়।
মোজাইক
মোজাইক হলো একধরনের বহুলব্যবহৃত ফ্লোর ফিনিশ। কংক্রিটের ফ্লোরের উপর মার্বেল পাথরকুচি (৬মি. মি. এর ছোট) সিমেন্ট , সাদা পাউডার, পানি নিরোধক এজেন্ট ইত্যাদি আনুপাতিক হারে মিশিয়ে যে ফ্লোর ফিনিশ তৈরি করা হয় তাকে মোজাইক বলে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
ক) পাথর কুচি = ২ভাগ
খ) সিমেন্ট (গ্রে ও হোয়াইট) = ১ ভাগ
গ) পানি = প্রয়োজন মত
ঘ) ঘর্ষণ পাথর = প্রয়োজন মত
মার্বেল চিপস সাধারণত ভারতীয় বা পাকিস্তানি হয়ে থাকে। আমাদের দেশে জয়পুরহাটে উন্নতমানের মার্বেল পাথর থাকলেও এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে উত্তোলন ও ব্যবহার শুরু হয়নি।
তৈরির পদ্ধতি
কংক্রিটের ফ্লোরের উপর নির্দিষ্ট সাইজের মার্বেল পাথরকুচি, রঙিন/সাদা সিমেন্ট, সাদা পাউডার, পানি নিরোধক এজেন্ট ইত্যাদি মিশিয়ে পানি দিয়ে মসলা তৈরি করা হয়। মোজাইকের কাজ শুরু করার পূর্বে ১:২ (১ ভাগ সিমেন্ট, ২ ভাগ বালি) অনুপাতে নিচের মূল ফ্লোরটি তৈরি করে নেয়া হয়। এর উপর মোজাইকের মসলা আন্ত ১/২” পুরু করে প্রলেপ দেয়া হয়। মোজাইকের এ প্ররেপটি ১৫ থেকে ২০ দিন যথানিয়মে কিউরিং করানো হয়। অতঃপর পর্যায়ক্রমে ৪০,৬০,৮০,১০০ ও ১২০ নং পাথর দিয়ে ঘর্ষণ করে মসৃণ করা হয়। এ কাজকে মোজাইক কাটিং ওয়ার্ক বলে।
মোজাইক অনেকটা টাইলসের মত কাজ করে। তবে মোজাইকে টাইলসের চেয়ে খরচ কম। মোজাইকে বিভিন্ন ডিজাইন করা সম্ভব।
এখানে বিভিন্ন প্রকার মোজাইকের পাথর এবং সিমেন্টের মূল্য দেওয়া হল
প্রকার | উৎস | ওজন (ব্যাগ প্রতি) | |
সাদা পাথর | ইন্ডিয়ান | ৪৫ কেজি | |
কালো | ইন্ডিয়ান | ৪০ কেজি | |
রঙিন | ইন্ডিয়ান | ৪০ কেজি | |
সাদা পাথর | পাকিস্তানী | ৪০ কেজি | |
সাদা সিমেন্ট | থাইল্যান্ড | ৪০ কেজি | |
সাদা সিমেন্ট | বাংলাদেশ | ৪০ কেজি |
প্রয়েদ মূল্য তালিকা পরিবর্তীত বাজার দরের উপর নির্ভরশীল।